শনিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫

ডাকসু নির্বাচন: শিবিরের শঙ্কা, শিবির নিয়ে শঙ্কা

প্রকাশিত :

আরাফাত সেতু / পত্রিকা থেকে সংগৃহীত

জুলাই অভ্যুত্থানের এক বছর পেরোতে না পেরোতেই জন-আকাঙ্ক্ষা যখন মিইয়ে যাচ্ছে, ঠিক তখনই গণতন্ত্রের প্রথম পরীক্ষা হিসেবে হাজির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশের ‘দ্বিতীয় সংসদ’ হিসেবে অভিহিত এই নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার ওপরেই নির্ভর করছে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভবিষ্যৎ।

সাত দশকের ইতিহাসে মাত্র ৩৭ বার নির্বাচন হলেও ডাকসু সারাদেশের ছাত্র-জনতার আবেগ, অনুভূতি ও অভিব্যক্তির এক মূর্ত প্রতীক। সবার চোখ এখন ডাকসু নির্বাচনের দিকে।

ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আগামী ৯ সেপ্টেম্বর ডাকসু ও হল সংসদের নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। ২৬ আগস্ট চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা শুরু হওয়ার কথা।

ক্যাম্পাসে ইতোমধ্যে নির্বাচনী আমেজ তৈরি হয়েছে। প্রার্থীরাও বসে নেই, ভোটারদের সঙ্গে সংযোগ করছেন, আড্ডা–গল্প ও কুশল বিনিময়ের মাধ্যমে তাদের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।

নিষিদ্ধ ছাত্রলীগবিহীন এই নির্বাচনে অনেকগুলো প্যানেল ঘোষিত হয়েছে। শিক্ষার্থীদের ধারণা, মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে পাঁচটি প্যানেলের—ছাত্রদল, বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ (গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ), প্রতিরোধ পর্ষদ (বামপন্থী সাত ছাত্রসংগঠনের যৌথ প্যানেল), উমামা ফাতেমার নেতৃত্বে ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য’ এবং ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের (ইসলামী ছাত্রশিবির) মধ্যে।

এর বাইরে জুলাই অভ্যুত্থানের অনেক পরিচিত মুখ স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। তবে সহসভাপতি প্রার্থী জুলিয়াস সিজার তালুকদারকে (সাবেক ছাত্রলীগ নেতা) নিয়ে ক্যাম্পাসে সমালোচনা আছে। বিভিন্ন পক্ষ তার প্রার্থিতা প্রত্যাহারের দাবি তুললেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তা বহাল রেখেছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের বিরুদ্ধে একপক্ষীয় আচরণের অভিযোগ তুলে ডাকসু নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছে ছাত্রশিবির। তাদের প্যানেলের জিএস প্রার্থী এস এম ফরহাদের অভিযোগ, ‘ডাকসুর নির্বাচন কমিশন, হল প্রাধ্যক্ষসহ বিভিন্ন শিক্ষক একটি দলের কর্মসূচিতে গিয়ে দলটির প্রতিনিধিত্ব করছেন।’

অনেক বছর গোপনে থাকলেও ছাত্রশিবির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রকাশ্যে কর্মকাণ্ড পরিচালনা শুরু করে জুলাই অভ্যুত্থানের পর। জুলাই-আগস্টের অচলাবস্থায় দীর্ঘ ১১২ দিন পর গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর ক্লাসে ফেরেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তার আগেরদিন ক্যাম্পাসের ১০টি ছাত্রসংগঠনের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সেই সভায় অংশ নেয় ছাত্রশিবির।

গত ১০ আগস্ট এমনই এক সভায় শিবির অংশগ্রহণ করায় ‘ওয়াক আউট’ করে বামপন্থী সংগঠনগুলোর একাংশ। ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি (একাংশ) মাহিন শাহরিয়ার রেজা সেসময় বলেন, ‘গণহত্যাকারী সংগঠন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তার কার্যক্রম পরিচালনার এখতিয়ার রাখে না। কিন্তু বারবার তাদের আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে সেটির বিরোধিতা করছি। প্রশাসনের কাছে আমরা এর সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা চাচ্ছি।’

গোপন থেকে প্রকাশ্যে

সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদীর নেতৃত্বে ১৯৪১ সালে জামায়াত প্রতিষ্ঠার পর থেকে দলটি চারবার নিষিদ্ধ হয়। তৎকালীন পাকিস্তানে ১৯৫৯ ও ১৯৬৪ সালে এবং স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭২ সালে অন্য তিনটি ধর্মভিত্তিক দলের সঙ্গে জামায়াতও নিষিদ্ধ হয়। পরে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাসনামলে ১৯৭৯ সালের ২৫ মে স্বাধীন বাংলাদেশে প্রকাশ্য রাজনীতির সুযোগ পায় জামায়াত। দলটির ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘও নাম পরিবর্তন করে ইসলামী ছাত্রশিবির হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।

দেড় দশকের শাসনামলে মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের শক্তি জামায়াত-শিবিরের বিরোধিতাকেই রাজনীতির অন্যতম হাতিয়ার করেছিল স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ। পতনের মাত্র চার দিন আগে তারা দলটিকে নিষিদ্ধ করলেও মাত্র ২৮ দিনের মাথায় সেই আদেশ প্রত্যাহার করে নেয় অন্তর্বর্তী সরকার।

পটপরিবর্তনের রাজনীতিতে জামায়াতের পাশাপাশি ক্যাম্পাস রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হিসেবে আবির্ভূত হয় তাদের ছাত্রসংগঠন ছাত্রশিবির। বর্তমানে সংগঠনটি তার ৪৮ বছরের ইতিহাসে ‘সুবর্ণ’ সময় পার করছে। বলা হচ্ছে, ইতোমধ্যে তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সবকয়টি হলের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে, আর ডাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে তাদের আধিপত্য আরও বেড়েছে।

অভিযোগ আছে, ২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানকে দিয়ে ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মুছে দেওয়ার চেষ্টা করছে শিবির। অন্যান্য ছাত্র সংগঠনগুলো এখনো ক্যাম্পাসে শিবিরকে সহজভাবে নিচ্ছে না। এর কিছু নমুনা দেখে নেওয়া যাক।

মুক্তিযুদ্ধকে কটাক্ষ

২৯ জানুয়ারি ২০২৫

বছরের শুরুতেই নিজেদের প্রকাশনা ‘ছাত্র সংবাদ’-এর এক প্রবন্ধে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কটাক্ষ করে বসে শিবির। ছাত্র সংবাদের ডিসেম্বর-২০২৪ সংখ্যায় ‘যুগে যুগে স্বৈরাচার ও তাদের করুণ পরিণতি’ শীর্ষক প্রবন্ধে বলা হয়, ‘সে সময়ের অনেক মুসলিম না বুঝে মুক্তিযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিল, এটা তাদের ব্যর্থতা ও অদূরদর্শিতা ছিল।’

এ ঘটনায় অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ফেসবুকে লেখেন, ‘বাংলাদেশপন্থীদের অবশ্যই মুক্তিযুদ্ধপন্থী হতে হবে। তবে এটাও সত্য যে, মুক্তিযুদ্ধ করা অনেকেই ফ্যাসিস্ট ও তাবেদার হয়ে উঠেছিলেন। আজ তারা ছাত্র-জনতার কাছে পরাজিত হয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে যারা যাবেন, তারাও মজলুম বাংলাদেশিদের বিরুদ্ধে যাওয়ার কারণে অতীতে পরাজিত হয়েছেন, সামনেও পরাজিত হতে বাধ্য।’

সমালোচনার মুখে এক বিবৃতিতে দুঃখ প্রকাশ করে বিতর্কিত প্রবন্ধটি অনলাইন থেকে ও সেই সংখ্যার সকল প্রিন্ট কপি প্রত্যাহার করা হয়।

মিছিলে উসকানি-বাধা

১৯ মে ২০২৫

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ থেকে জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামের খালাসের প্রতিবাদে ঢাবি ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের মশাল মিছিল চলার সময় শিবিরের পক্ষ থেকে উসকানি ও বাধা দেওয়ার চেষ্টা হয় বলে অভিযোগ করে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট (মার্ক্সবাদী)।

তারা বলে, ‘৫ আগস্ট-পরবর্তী সময়ে ছাত্রশিবিরের এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড মতপ্রকাশের অধিকার ও শিক্ষার গণতান্ত্রিক পরিবেশকে মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত করছে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম নগরে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের শান্তিপূর্ণ মিছিলে শিবিরের হামলার প্রতিবাদ ও বিচারও দাবি করে ছাত্রফ্রন্ট।

ছাত্রলীগ পরিচয়ে নির্যাতন চালাত শিবির

৩ আগস্ট ২০২৫

গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক আবদুল কাদের ফেসবুকে শিবিরের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করেন।

তিনি লিখেন, ‘হলে থাকার কারণে ছাত্রশিবিরের যে ছেলেগুলো সক্রিয়ভাবে ছাত্রলীগ করত, তারা মূলত আইডেনটিটি ক্রাইসিস (আত্মপরিচয়ের সংকট) থেকে উতরানোর জন্য কিছু ক্ষেত্রে অতি উৎসাহী কর্মকাণ্ডে জড়াত। সেটা নিজেকে ছাত্রলীগ প্রমাণের দায় থেকে। ছাত্রলীগ যে নিপীড়ন-নির্যাতন চালাত, তারা সেগুলার অংশীদার হতো, লীগের কালচারই চর্চা করত।’

আওয়ামী লীগের শাসনামলে ছাত্রলীগের হয়ে শিক্ষার্থীদের নির্যাতন–নিপীড়নের সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন হলের বেশ কয়েকজনকে শিবির সংশ্লিষ্ট বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

ডাকসু নির্বাচন: শিবিরের শঙ্কা, শিবির নিয়ে শঙ্কা

ডাকসু নির্বাচনে শিবির

জুলাই অভ্যুত্থানের এক বছর পেরোতে না পেরোতেই জন-আকাঙ্ক্ষা যখন মিইয়ে যাচ্ছে, ঠিক তখনই গণতন্ত্রের প্রথম পরীক্ষা হিসেবে হাজির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশের ‘দ্বিতীয় সংসদ’ হিসেবে অভিহিত এই নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার ওপরেই নির্ভর করছে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভবিষ্যৎ।

সাত দশকের ইতিহাসে মাত্র ৩৭ বার নির্বাচন হলেও ডাকসু সারাদেশের ছাত্র-জনতার আবেগ, অনুভূতি ও অভিব্যক্তির এক মূর্ত প্রতীক। সবার চোখ এখন ডাকসু নির্বাচনের দিকে।

ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আগামী ৯ সেপ্টেম্বর ডাকসু ও হল সংসদের নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। ২৬ আগস্ট চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা শুরু হওয়ার কথা।

ক্যাম্পাসে ইতোমধ্যে নির্বাচনী আমেজ তৈরি হয়েছে। প্রার্থীরাও বসে নেই, ভোটারদের সঙ্গে সংযোগ করছেন, আড্ডা–গল্প ও কুশল বিনিময়ের মাধ্যমে তাদের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।

নিষিদ্ধ ছাত্রলীগবিহীন এই নির্বাচনে অনেকগুলো প্যানেল ঘোষিত হয়েছে। শিক্ষার্থীদের ধারণা, মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে পাঁচটি প্যানেলের—ছাত্রদল, বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ (গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ), প্রতিরোধ পর্ষদ (বামপন্থী সাত ছাত্রসংগঠনের যৌথ প্যানেল), উমামা ফাতেমার নেতৃত্বে ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য’ এবং ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের (ইসলামী ছাত্রশিবির) মধ্যে।

এর বাইরে জুলাই অভ্যুত্থানের অনেক পরিচিত মুখ স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। তবে সহসভাপতি প্রার্থী জুলিয়াস সিজার তালুকদারকে (সাবেক ছাত্রলীগ নেতা) নিয়ে ক্যাম্পাসে সমালোচনা আছে। বিভিন্ন পক্ষ তার প্রার্থিতা প্রত্যাহারের দাবি তুললেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তা বহাল রেখেছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের বিরুদ্ধে একপক্ষীয় আচরণের অভিযোগ তুলে ডাকসু নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছে ছাত্রশিবির। তাদের প্যানেলের জিএস প্রার্থী এস এম ফরহাদের অভিযোগ, ‘ডাকসুর নির্বাচন কমিশন, হল প্রাধ্যক্ষসহ বিভিন্ন শিক্ষক একটি দলের কর্মসূচিতে গিয়ে দলটির প্রতিনিধিত্ব করছেন।’

অনেক বছর গোপনে থাকলেও ছাত্রশিবির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রকাশ্যে কর্মকাণ্ড পরিচালনা শুরু করে জুলাই অভ্যুত্থানের পর। জুলাই-আগস্টের অচলাবস্থায় দীর্ঘ ১১২ দিন পর গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর ক্লাসে ফেরেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তার আগেরদিন ক্যাম্পাসের ১০টি ছাত্রসংগঠনের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সেই সভায় অংশ নেয় ছাত্রশিবির।

গত ১০ আগস্ট এমনই এক সভায় শিবির অংশগ্রহণ করায় ‘ওয়াক আউট’ করে বামপন্থী সংগঠনগুলোর একাংশ। ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি (একাংশ) মাহিন শাহরিয়ার রেজা সেসময় বলেন, ‘গণহত্যাকারী সংগঠন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তার কার্যক্রম পরিচালনার এখতিয়ার রাখে না। কিন্তু বারবার তাদের আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে সেটির বিরোধিতা করছি। প্রশাসনের কাছে আমরা এর সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা চাচ্ছি।’

গোপন থেকে প্রকাশ্যে

সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদীর নেতৃত্বে ১৯৪১ সালে জামায়াত প্রতিষ্ঠার পর থেকে দলটি চারবার নিষিদ্ধ হয়। তৎকালীন পাকিস্তানে ১৯৫৯ ও ১৯৬৪ সালে এবং স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭২ সালে অন্য তিনটি ধর্মভিত্তিক দলের সঙ্গে জামায়াতও নিষিদ্ধ হয়। পরে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাসনামলে ১৯৭৯ সালের ২৫ মে স্বাধীন বাংলাদেশে প্রকাশ্য রাজনীতির সুযোগ পায় জামায়াত। দলটির ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘও নাম পরিবর্তন করে ইসলামী ছাত্রশিবির হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।

দেড় দশকের শাসনামলে মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের শক্তি জামায়াত-শিবিরের বিরোধিতাকেই রাজনীতির অন্যতম হাতিয়ার করেছিল স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ। পতনের মাত্র চার দিন আগে তারা দলটিকে নিষিদ্ধ করলেও মাত্র ২৮ দিনের মাথায় সেই আদেশ প্রত্যাহার করে নেয় অন্তর্বর্তী সরকার।

পটপরিবর্তনের রাজনীতিতে জামায়াতের পাশাপাশি ক্যাম্পাস রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হিসেবে আবির্ভূত হয় তাদের ছাত্রসংগঠন ছাত্রশিবির। বর্তমানে সংগঠনটি তার ৪৮ বছরের ইতিহাসে ‘সুবর্ণ’ সময় পার করছে। বলা হচ্ছে, ইতোমধ্যে তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সবকয়টি হলের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে, আর ডাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে তাদের আধিপত্য আরও বেড়েছে।

অভিযোগ আছে, ২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানকে দিয়ে ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মুছে দেওয়ার চেষ্টা করছে শিবির। অন্যান্য ছাত্র সংগঠনগুলো এখনো ক্যাম্পাসে শিবিরকে সহজভাবে নিচ্ছে না। এর কিছু নমুনা দেখে নেওয়া যাক।

মুক্তিযুদ্ধকে কটাক্ষ

২৯ জানুয়ারি ২০২৫

বছরের শুরুতেই নিজেদের প্রকাশনা ‘ছাত্র সংবাদ’-এর এক প্রবন্ধে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কটাক্ষ করে বসে শিবির। ছাত্র সংবাদের ডিসেম্বর-২০২৪ সংখ্যায় ‘যুগে যুগে স্বৈরাচার ও তাদের করুণ পরিণতি’ শীর্ষক প্রবন্ধে বলা হয়, ‘সে সময়ের অনেক মুসলিম না বুঝে মুক্তিযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিল, এটা তাদের ব্যর্থতা ও অদূরদর্শিতা ছিল।’

এ ঘটনায় অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ফেসবুকে লেখেন, ‘বাংলাদেশপন্থীদের অবশ্যই মুক্তিযুদ্ধপন্থী হতে হবে। তবে এটাও সত্য যে, মুক্তিযুদ্ধ করা অনেকেই ফ্যাসিস্ট ও তাবেদার হয়ে উঠেছিলেন। আজ তারা ছাত্র-জনতার কাছে পরাজিত হয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে যারা যাবেন, তারাও মজলুম বাংলাদেশিদের বিরুদ্ধে যাওয়ার কারণে অতীতে পরাজিত হয়েছেন, সামনেও পরাজিত হতে বাধ্য।’

সমালোচনার মুখে এক বিবৃতিতে দুঃখ প্রকাশ করে বিতর্কিত প্রবন্ধটি অনলাইন থেকে ও সেই সংখ্যার সকল প্রিন্ট কপি প্রত্যাহার করা হয়।

মিছিলে উসকানি-বাধা

১৯ মে ২০২৫

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ থেকে জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামের খালাসের প্রতিবাদে ঢাবি ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের মশাল মিছিল চলার সময় শিবিরের পক্ষ থেকে উসকানি ও বাধা দেওয়ার চেষ্টা হয় বলে অভিযোগ করে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট (মার্ক্সবাদী)।

তারা বলে, ‘৫ আগস্ট-পরবর্তী সময়ে ছাত্রশিবিরের এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড মতপ্রকাশের অধিকার ও শিক্ষার গণতান্ত্রিক পরিবেশকে মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত করছে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম নগরে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের শান্তিপূর্ণ মিছিলে শিবিরের হামলার প্রতিবাদ ও বিচারও দাবি করে ছাত্রফ্রন্ট।

ছাত্রলীগ পরিচয়ে নির্যাতন চালাত শিবির

৩ আগস্ট ২০২৫

গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক আবদুল কাদের ফেসবুকে শিবিরের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করেন।

তিনি লিখেন, ‘হলে থাকার কারণে ছাত্রশিবিরের যে ছেলেগুলো সক্রিয়ভাবে ছাত্রলীগ করত, তারা মূলত আইডেনটিটি ক্রাইসিস (আত্মপরিচয়ের সংকট) থেকে উতরানোর জন্য কিছু ক্ষেত্রে অতি উৎসাহী কর্মকাণ্ডে জড়াত। সেটা নিজেকে ছাত্রলীগ প্রমাণের দায় থেকে। ছাত্রলীগ যে নিপীড়ন-নির্যাতন চালাত, তারা সেগুলার অংশীদার হতো, লীগের কালচারই চর্চা করত।’

আওয়ামী লীগের শাসনামলে ছাত্রলীগের হয়ে শিক্ষার্থীদের নির্যাতন–নিপীড়নের সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন হলের বেশ কয়েকজনকে শিবির সংশ্লিষ্ট বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

টিএসসিতে যুদ্ধাপরাধীদের ছবি

৫ আগস্ট ২০২৫

জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে টিএসসিতে ছাত্রশিবিরের বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ‘৩৬ জুলাই: আমরা থামব না’ শীর্ষক প্রদর্শনীতে যুদ্ধাপরাধীদের ছবি টানালে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। পরে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে সন্ধ্যায় প্রদর্শনী থেকে সেসব ছবি সরিয়ে নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানকে ৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধের মুখোমুখি দাঁড় করানোর লক্ষ্যে শিবিরের অপচেষ্টার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায় ছাত্রদল।

সেদিন রাত ৯টার দিকে বাম সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা টিএসসি থেকে ‘রাজাকার-স্বৈরাচারের প্রতি ঘৃণা মিছিল’ বের করেন। এর আগে ক্রিয়াশীল সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে প্রক্টরের কাছে চারটি দাবি তুলে ধরা হয়।

এ ঘটনায় শিবিরের প্রতি নিন্দা জানিয়ে তাদের নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক। এই ঘটনাসহ বেশ কয়েকটি ঘটনায় ব্যর্থতার কারণে প্রক্টরের পদত্যাগেরও দাবি জানায় তারা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরসহ যেসব কর্মকর্তা ছাত্রশিবিরকে এ প্রদর্শনীর অনুমতি দেওয়ার সঙ্গে জড়িত তাদের দায়িত্বে অবহেলার জন্য কঠোর শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানায় বাংলাদেশ উদীচী শিল্পী-গোষ্ঠী।

ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ২৮ জন শিক্ষার্থী এক বিবৃতিতে বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫৪ বছর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় নির্বিচার গণহত্যা, নারী ধর্ষণ ও নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত, দণ্ডিত যুদ্ধাপরাধীদের ছবি ও নাম প্রদর্শনী জাতির সেই আত্মত্যাগ ও মুক্তিযুদ্ধের অবমাননার শামিল এবং সীমাহীন ধৃষ্টতা। ভবিষ্যতে এ ধরনের তৎপরতার বিষয়ে আমাদের সজাগ থাকতে হবে এবং তা ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দিতে হবে।’

ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘একটি অবিশ্বাস্য ঘটনা, টিএসসিতে আলবদর-রাজাকারদের ছবি টানানো হচ্ছে। এই চেষ্টা আরও শক্তিশালী হবে, যদি না বামপন্থীরা ঐক্যবদ্ধ থাকে। ধর্ম নিয়ে যারা রাজনীতি করে, তারাও বুর্জোয়া, ব্যক্তিমালিকানায় বিশ্বাস করে। সে জন্য আমরা যারা সমাজ পরিবর্তন করতে চাই, তাদের একত্র হয়ে যুক্ত ফ্রন্ট গঠন করতে হবে।’

শিবিরের প্রার্থিতা বাতিলের দাবি

১৯ আগস্ট ২০২৫

ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রলীগের সাবেক নেতা জুলিয়াস সিজার তালুকদার ও ছাত্রশিবিরের প্রার্থীদের প্রার্থিতা বাতিলের দাবি জানিয়ে ছাত্র ইউনিয়নের (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ) একাংশ এক বিবৃতিতে বলে, ‘ডাকসু গঠনতন্ত্রে উল্লেখ আছে, এই সংসদ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় পরিচালিত হবে। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী, যুদ্ধাপরাধী, গণহত্যার দোসর ইসলামী ছাত্র সংঘের সরাসরি উত্তরাধিকার ইসলামী ছাত্রশিবির ডাকসুতে নির্বাচন করার সুযোগ পাওয়ার কথা না। তারপরও ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রতি বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এক ধরনের পক্ষপাত লক্ষ করা গেছে।’

তারা আরও বলে, ‘পরিবেশ পরিষদের সিদ্ধান্তকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বারবার ইসলামী ছাত্রশিবিরকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করার সুযোগ করে দিয়েছে। যুদ্ধাপরাধী, গণহত্যার দোসর, সন্ত্রাসী সংগঠনের ডাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার নৈতিক অধিকার নেই। আমরা ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রার্থীদেরও প্রার্থিতা বাতিলের দাবি জানাই।’

বিতর্কের কেন্দ্রে শিবির

ডাকসুর গঠনতন্ত্রের শুরুতেই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অংশে উল্লেখ আছে, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধকে সমুন্নত ও লালন করা। বাংলাদেশের ইতিহাসে বৈষম্য ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের জুলাই বিদ্রোহ এবং অন্যান্য সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনের চেতনা প্রতিষ্ঠা করা।

শুক্রবার ডেইলি স্টারের সঙ্গে আলাপকালে শিবিরনেতা সাদিক কায়েম বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, স্বাধীনতা, দেশের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতার ব্যাপারে আমাদের কোনো আপস নেই। ৭১-এর মাধ্যমে আমরা ভূখণ্ড পেয়েছি ও ২৪-এর মাধ্যমে দিল্লির দাসত্ব থেকে আজাদি পেয়েছি। ৭১ আমাদের অস্তিত্ব। আমরা ১৬ ডিসেম্বর, ২৫-২৬ মার্চ থেকে শুরু করে প্রতিটি প্রোগ্রাম বাস্তবায়ন করে আসছি সেই ১৯৭৭ সাল থেকে।’

শিবিরের প্যানেলে জায়গা পাওয়া জয়েন উদ্দিন সরকার তন্ময় ফেসবুকে বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানকে ‘ফ্লাইট ছিনতাইকারী’ বলে পোস্ট দেন। পরে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে সেই পোস্ট প্রত্যাহার করে নেন।

এ নিয়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া হলে ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’ তাকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানায়। একইসঙ্গে প্রচারণার ব্যানার থেকেও তার ছবি বাদ দেওয়া হয়।

ছাত্র ইউনিয়ন নেতা মেঘমল্লার বসু ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমরা শেষ প্রশাসনিক মিটিংয়েও বলে এসেছি, পরবর্তীতে কোনো মিটিংয়ে যদি শিবির থাকে এবং সেই মিটিংয়ের এজেন্ডা হিসেবে যদি শিবির যে নিষিদ্ধ সত্ত্বা বা শিবিরের রাজনৈতিক প্রক্রিয়া কী হবে, তা নিয়ে কোনো এজেন্ডা না থাকে, তাহলে আমরা সেরকম কোনো মিটিংয়ে আর যাব না।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ৭১ ও ২৪-এর গণহত্যাকারী শক্তিকে ক্যাম্পাসে নরমালাইজ করার চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ তার। বলেন, ‘ডাকসুর গঠনতন্ত্র তৈরি হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের সম্মানার্থে, সেই নির্বাচনে যারা একজন বীরশ্রেষ্ঠকে প্লেন হাইজ্যাকার হিসেবে উল্লেখ করেন, তাদের ডাকসু নির্বাচনে অংশ নেওয়ার এখতিয়ার আছে কি না, প্রশাসনের কাছে এই প্রশ্ন রাখতে চাই।’

এসব অভিযোগ বিষয়ে ঢাবি প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘যারা অভিযোগ করে তাদের ব্যাপারে অনমনীয় কোনো অবস্থান আমরা দেখিয়েছি কি না—সেটা হলো প্রশ্ন। এখানে ২৩টি সংগঠন, যাদের সঙ্গে আমরা বসি, তারা এমন কোনো অভিযোগ করতে পারবে কি না? আমি আমার জায়গা থেকে ইক্যুয়াল ট্রিটমেন্ট দেওয়ার চেষ্টা করছি।’

তবে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা পরিবেশ পরিষদের সিদ্ধান্তে ক্যাম্পাসে শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ’ প্রসঙ্গে প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ ও শিবিরনেতা সাদিক কায়েমের কথার সুর প্রায় একই। প্রক্টর বিষয়টিকে ‘বায়বীয়’ বলে উল্লেখ করেছেন। আর সাদিক কায়েম বলেছেন, ‘এর কোনো ভিত্তি নেই’।

শিবিরের এই নেতা বলেন, ‘আপনারা বারবার শুধু পেছনে ফিরে যান, এটি আনএক্সপেক্টেড। যে জিনিসের কোনো ভিত্তি নেই, স্বাধীন বাংলাদেশে জুলাইয়ের পর পরিবেশ পরিষদের মতো একটি ফ্যাসিবাদী চুক্তির মাধ্যমে শিবিরকে হত্যাযোগ্য করবেন, মার্জিনালাইজ করবেন, কর্নার করবেন, এটাও তো এক রকম মবই হলো।’

প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘আমরা কোনো বায়বীয় কথার ওপর সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। চুক্তিপত্রটা আমি বিভিন্ন জায়গায় খুঁজেছি, পাইনি। সেসময় একটি সামাজিক চুক্তি হতে পারে, আমি সেটিকে রেস্পেক্ট করি। তবে একটি বায়বীয় বিষয়ের ওপর আমি ধরে নেব যে, ওরা (শিবির) থাকতে পারবে না, এই মুহূর্তে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এরকম আশকারা আমরা কাউকে দেব না। আর দ্বিতীয়ত, ‘৯০ আর ‘২৪-এ আকাশ-পাতাল তফাৎ।’

স্বৈরাচার এরশাদের শাসনামলে ১৯৮৭ সালের ১০ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার লক্ষ্যে ২২টি সংগঠনের উদ্যোগে ও উপাচার্যের নেতৃত্বে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা পরিবেশ পরিষদ’ গঠন করা হয়। এ বিষয়ে দৈনিক সংবাদের প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতি মাসের তৃতীয় বুধবার পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত হবে।

ডাকসু কার্যকর না থাকলে ছাত্রসংগঠনগুলোর কার্যক্রম সমন্বয় ও সহাবস্থান নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে গঠিত এই পরিষদের সর্বশেষ বৈঠক হয়েছে ২০২২ সালে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সাম্প্রতিক বিভিন্ন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বাম ও প্রগতিশীল ছাত্রসংগঠনগুলোর পাশাপাশি ছাত্রদলও ‘পরিবেশ পরিষদ’ সক্রিয় করার দাবিতে সোচ্চার হয়েছে।

 

সর্বশেষ

Rooli On Line Casino No Deposit Bonus Codes Online Deals Reside In Canada

The devil’s all the time within the particulars — and Rooli Casino’s $25 no...

Beyond the Bets Elevate Your Play & Claim Daily Rewards at winbeatz casino with Seamless Registratio

Beyond the Bets: Elevate Your Play & Claim Daily Rewards at winbeatz casino with...

Seize the Plunder – Explore 200+ Games & Exclusive Rewards at fatpirate online casino.

Seize the Plunder – Explore 200+ Games & Exclusive Rewards at fatpirate online casino.Understanding...

Gransino On Line Casino Evaluation ⭐ 500 Bonus + 200 Free Spins

We spend time exploring what's on provide so you know you probably can simply...

আরও পড়ুন

“প্রজন্ম মিরসরাই মেধাবৃত্তি পরীক্ষা–২০২৫ অনুষ্ঠিত”

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রজন্ম মিরসরাই মেধাবৃত্তি পরীক্ষা–২০২৫। আজ শনিবার (৮ নভেম্বর ২০২৫)...

“ছাত্র-ছাত্রীরা দেশ গঠনে অংশগ্রহণ না করলে জাতি অন্ধকারে থেকে যাবে” — এডভোকেট সাইফুর রহমান

মীরসরাই উপজেলার জোরারগঞ্জ থানার ৬নং ইছাখালী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ঐতিহ্যবাহী আবুরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী...

“ আজ থেকে আমার গ্রুপ বিলুপ্ত, এখন আমরা ধানের শীষের সৈনিক” — নুরুল আমিন চেয়ারম্যান

“আজ থেকে মিরসরাইয়ে চেয়ারম্যান গ্রুপের বিলুপ্তি ঘোষণা করছি। বিএনপির চেয়ারম্যান নামে আর কোনো গ্রুপ...